যুদ্ধবিরতির পর গাজায় প্রতিদিন পৌঁছাবে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ
- By Jamini Roy --
- 19 January, 2025
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় ত্রাণ সরবরাহের উদ্যোগ ব্যাপকভাবে জোরদার হয়েছে। মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করবে ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক। এসব ট্রাকে থাকবে খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, এবং ৫০টি ট্রাকে থাকবে জ্বালানি।
এরই মধ্যে গাজা-মিশর সীমান্তে মানবিক ত্রাণভর্তি শত শত ট্রাক অপেক্ষা করছে। ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রমে উত্তর গাজার ক্ষুধা এবং চিকিৎসা সংকট দূরীকরণকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। জাতিসংঘের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআত্তি শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "গাজায় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে। এতে খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানি থাকবে।"
লেবাননে সফরকালে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, "আমি প্রথম দিন থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তি, এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশাধিকার নিয়ে কাজ করছি। আমার বিশ্বাস, এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা এই তিনটি লক্ষ্য অর্জনে অগ্রগতি দেখতে পাব। আর কোনো সংঘর্ষ হবে না, সাহায্য প্রবেশ সহজ হবে এবং জিম্মিদের মুক্তি শুরু হবে।"
গুতেরেস আরও আশা প্রকাশ করেন যে গাজার সাধারণ জনগণের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম নির্বিঘ্ন হবে এবং এই সহযোগিতার ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
এদিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিন সরকার গাজা উপত্যকার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকার প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "গাজা উপত্যকার জনগণকে সুরক্ষা দিতে এবং তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত।"
গাজায় ১৫ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমকে সবার আগে রাখা হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বাস করছে, ত্রাণ সরবরাহ এবং ফিলিস্তিন সরকারের সহযোগিতার মাধ্যমে গাজার জনগণের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হবে।
গাজার পরিস্থিতি নজিরবিহীনভাবে সংকটাপন্ন থাকায়, এই ত্রাণ কার্যক্রম এবং যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।